কপোতাক্ষ নদ কবিতা – কপােতাক্ষ নদ চতুর্দশপদী কবিতায় কবি যশােরের সাগরদাড়ির পাশ দিয়ে কুলকুল ধ্বনিতে বয়ে যাওয়া কপােতাক্ষের প্রতি তাঁর গভীর প্রেমবােধের পরিচয় দিয়েছেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ – ২৯ জুন ১৮৭৩) ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি এবং নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা। তাকে বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণ্য করা হয়। ঐতিহ্যের অনুবর্তিতা অমান্য করে নব্যরীতি প্রবর্তনের কারণে তাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
ব্রিটিশ ভারতের যশোর জেলার এক সম্ভ্রান্ত কায়স্থ বংশে জন্ম হলেও মধুসূদন যৌবনে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে মাইকেল মধুসূদন নাম গ্রহণ করেন এবং পাশ্চাত্য সাহিত্যের দুর্নিবার আকর্ষণবশত ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। জীবনের দ্বিতীয় পর্বে মধুসূদন নিজ মাতৃভাষার প্রতি মনোযোগ দেন। এ পর্বে তিনি বাংলায় নাটক, প্রহসন ও কাব্যরচনা করেন। মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্য।
কপোতাক্ষ নদ কবিতা – মাইকেল মধুসূদন দত্ত
কপোতাক্ষ নদ কবিতা এর মূলভাবঃ
বিদেশি সাহিত্যে আত্মপ্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ কবি ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে স্বজনহীন জীবনযাত্রার মাঝে শৈশবকৈশােরের স্মৃতিবিজড়িত মাতৃরূপ কপােতাক্ষ নদকে স্মরণ করেছেন। তিনি সেখানে এ নদের মায়ামন্ত্র ধ্বনি শুনতে পেয়েছেন। কবি শুনতে পান কপােতাক্ষের কলকল ধ্বনি। তখন জন্মভূমির শৈশব-কৈশােরের বেদনা-বিধুর স্মৃতি তার মনে জাগিয়েছে কাতরতা। কবির মন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কপােতাক্ষের তীরে ফিরে আসার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। কবি বহু দেশ ভ্রমণ করে, বহু নদ-নদীর জলে নৌকা ভাসিয়ে, জলে পিপাসা মিটিয়েও দুগ্ধ-স্রোতােরূপী কপােতাক্ষের জলের সেই স্বাদ পাননি।
কারণ জন্মভূমির এই নদ যেন মায়ের স্নেহভােরে তাকে বেঁধেছে, কিছুতেই তিনি তাকে ভুলতে পারেন না। তার মনে সন্দেহ জাগে, এই নদের দেখা কি তিনি আর পাবেন? তাই তিনি প্রিয় নদের কাছে মিনতি করে বলেন- যদি কোনােদিন তিনি কপােতাক্ষের তীরে আর ফিরে যেতে নাও পারেন তবু যেন কপােতাক্ষ কবিকে মনে রাখে, বাংলার কোটি মানুষের কাছে তার কথা পৌছে দেয়; তাকে যেন সস্নেহে স্মরণ করে।
কপোতাক্ষ নদ কবিতা আবৃত্তিঃ
আরও দেখুনঃ