[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

১৭ই মার্চের কবিতা। ধন্য সেই পুরুষ – শামসুর রাহমান

১৭ই মার্চের কবিতা – ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। এইদিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে করা হয় নানা আয়োজন। পোষ্টে আপনি বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের কবিতা বা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা পাবেন। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে যুগে যুগে রচিত হয়েছে বহু কবিতা।

 

হুমায়ুন আজাদ, ১৯৪৭-২০০৪ [ Humayun Azad ]

 

শামসুর রাহমান (২৩ অক্টোবর ১৯২৯ – ১৭ আগস্ট ২০০৬) বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। জীবদ্দশাতেই তিনি বাংলাদেশের প্রধান কবি হিসেবে মর্যাদালাভ করেছিলেন। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগ, তথা পঞ্চাশের দশকে তিনি আধুনিক কবি হিসেবে বাংলা কবিতায় আবির্ভূত হন। এবং অল্প সময়ের ভেতরেই দুই বাংলায় ( তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম বাংলায়) কবি হিসেবে পরিচিতি পান। আধুনিক কবিতার অনন্য পৃষ্ঠপোষক বুদ্ধদেব বসুর ‘কবিতা’ পত্রিকায় ‘রূপালি স্নান’ কবিতাটি প্রকাশিত হলে কবি হিসেবে শামসুর রাহমান সুধীজনের দৃষ্টিলাভ করেন ।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা ১০০০ শব্দ

পরবর্তীতে উভয় বাংলাতেই তার শ্রেষ্ঠত্ব এবং জনপ্রিয়তা প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি নাগরিক কবি, তবে নিসর্গ তার কবিতায় খুব কম ছিল না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তার দুটি কবিতা খুবই জনপ্রিয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি মজলুম আদিব (বিপন্ন লেখক) ছদ্মনামে কলকাতার বিখ্যাত দেশ ও অন্যান্য পত্রিকায় কবিতা লিখতেন। শামসুর রাহমানের ডাক নাম বাচ্চু।

 

১৭ই মার্চের কবিতা

ধন্য সেই পুরুষ – শামসুর রাহমান

 

১৭ই মার্চের কবিতা

 

ধন্য সেই পুরুষ নদীর সাঁতার পানি থেকে যে উঠে আসে

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে;

ধন্য সেই পুরুষ, নীল পাহাড়ের চূড়া থেকে যে নেমে আসে

প্রজাপতিময় সবুজ গালিচার মত উপত্যকায়;

ধন্য সেই পুরুষ হৈমন্তিক বিল থেকে যে উঠে আসে

রঙ বেরঙের পাখি ওড়াতে ওড়াতে।

ধন্য সেই পুরুষ কাহাতের পর মই-দেয়া ক্ষেত থেকে যে ছুটে আসে

ফসলের স্বপ্ন দেখতে দেখতে।

ধন্য আমরা, দেখতে পাই দূরদিগন্ত থেকে এখনো তুমি আসো,

আর তোমারই প্রতীক্ষায়

ব্যাকুল আমাদের প্রাণ, যেন গ্রীষ্মকাতর হরিণ

জলধারার জন্যে। তোমার বুক ফুঁড়ে অহংকারের মতো

ফুটে আছে রক্তজবা, আর

আমরা সেই পুষ্পের দিকে চেয়ে থাকি, আমাদের

চোখের পলক পড়তে চায় না,

অপরাধে নত হয়ে আসে আমাদের দুঃস্বপ্নময় মাথা।

দেখ, একে একে সকলেই যাচ্ছে বিপথে অধঃপাত

মোহিনী নর্তকীর মতো

জুড়ে দিয়েছে বিবেক-ভোলানো নাচ মনীষার মিনারে,

বিশ্বস্ততা চোরা গর্ত খুঁড়ছে সুহৃদের জন্যে

সত্য খান খান হয়ে যাচ্ছে যখন তখন

কুমোরের ভাঙ্গা পাত্রের মতো,

চাটুকারদের ঠোঁটে অষ্টপ্রহর ছোটে কথার তুবড়ি,

দেখ, যে কোন ফসলের গাছ

সময়ে-অসময়ে ভরে উঠেছে শুধু মাকাল ফলে।

ঝলসে-যাওয়া ঘাসের মত শুকিয়ে যাচ্ছে মমতা

দেখ, এখানে আজ

কাক আর কোকিলের মধ্যে কোনো ভেদ নেই।

নানা ছলছুতোয়

ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর রৌদ্র ঝরে চিরকাল,

গান হয়ে

নেমে আসে শ্রাবণের বৃষ্টিধারা, যাঁর নামের ওপর

কখনো ধুলো জমতে দেয় না হাওয়া,

ধন্য সেই পুরুষ যাঁর নামের উপর পাখা মেলে দেয় জ্যোৎস্নার সারস,

ধন্য সেই পুরুষ যাঁর নামের উপর পতাকার মতো

দুলতে থাকে স্বাধীনতা,

ধন্য সেই পুরুষ যাঁর নামের ওপর ঝরে

মুক্তিযোদ্ধাদের জয়ধ্বনি।

স্বৈরাচারের মাথায় মুকুট পরাচ্ছে ফেরেব্বাজের দল।

দেখ, প্রত্যেকটি মানুষের মাথা

তোমার হাঁটুর চেয়ে এক তিল উঁচুতে উঠতে পারছে না কিছুতেই।

তোমাকে হারিয়ে

আমরা সন্ধ্যায়, হারিয়ে যাওয়া ছায়ারই মতো হয়ে যাচ্ছিলাম,

আমাদের দিনগুলি ঢেকে যাচ্ছিল শোকের পোশাকে,

তোমার বিচ্ছেদের সংকটের দিনে

আমরা নিজেদের ধ্বংসস্তূপে বসে বিলাপে ক্রন্দনে

আকাশকে ব্যথিত করে তুললাম ক্রমাগত; তুমি সেই বিলাপকে

রূপান্তরিত করেছো জীবনের স্তুতিগানে, কেননা জেনেছি –

জীবিতের চেয়েও অধিক জীবিত তুমি।

 

১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন । প্রতিবেদন রচনা

 

ধন্য সেই পুরুষ কবিতা আবৃত্তিঃ

 

 

আরও দেখুনঃ

 

Competitive Exams Preparation Gurukul, GOLN Logo [ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি গুরুকুল, লোগো ]

Leave a Comment