দেশপ্রেম বা স্বদেশ প্রেম । প্রবন্ধ রচনা

দেশপ্রেম বা স্বদেশ প্রেম নিয়ে আজকের আলোচনা। প্রতিজন মানুষের কাছে জন্মভূমি অত্যন্ত প্রিয়। মা যেমন তার স্নেহ আদর মমতা দিয়ে সন্তানকে লালন-পালন করেন, সেভাবেই দেশ আমাদের ধরিত্রীর সন্তান হিসেবে, বিশ্বমাঝে লালন করে। পৃথিবীর প্রতিজন মানুষ, খুব স্বাভাবিক ভাবেই তার নিজের দেশকে ভালোবাসে । দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসাটাই হল দেশপ্রেম।

দেশপ্রেম বা স্বদেশ প্রেম । প্রবন্ধ রচনা

দেশপ্রেম বা স্বদেশ প্রেম । প্রবন্ধ রচনা

যারা স্বর্গগত তারা এখনো জানে
স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভূমি
এসো স্বদেশব্রতের সহদীক্ষালোভী
সেই মৃত্যুঞ্জয়ীদের চরণচুমি

– মোহিনী চৌধুরী

 

ভূমিকা :

সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে
সার্থক জনম, মাগো , তোমায় ভালোবেসে
-(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

প্রতিজন মানুষের কাছে জন্মভূমি অত্য ন্ত প্রিয়। মা যেমন আদর স্নেহ মমতা দিয়ে সন্তানকে লালন-পালন করে , তেমনি ভাবে দেশ আমাদের ধরিত্রীর সন্তান হিসেবে বিশ্বমাঝে লালন করে । পৃথিবীর প্রতিজন মানুষ তার নিজের দেশকে ভালোবাসবে এটাই স্বাভাবিক। যে দেশে আমরা জন্মগ্রহণ করি তার আলো – বাতাস আমাদেরকে তিলেতিলে বড় করে তোলে , সে দেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। দেশকে ভালোবাসা ও দেশের প্রতি কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়ে আমরা দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে পারি । দেশপ্রেম মানব জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গুণ হিসেবে বিবেচিত হয়। নিজের দেশকে ভালোবাসর মাধ্যমে মানুষ বিশ্বের সকল সৃষ্টিকে ভালোবাসার গুরুত্বও বুঝতে পারে।

Books 2 দেশপ্রেম বা স্বদেশ প্রেম । প্রবন্ধ রচনা

দেশপ্রেম কী?

যে মা আমাদেরকে দীর্ঘ কষ্টভোগের পর জন্ম দিয়ে থাকে তাকে যেভাবে ভালোবাসি ঠিক একইভাবে স্বদেশকে ও আমরা সমানভাবে ভালোবাসি । দেশপ্রেম একটি মহৎ গুণ। জন্মগ্রহণ করা স্বভূমি কে ভক্তি -শ্রদ্ধা করার পাশাপাশি সেই ভূমির সকল মানুষকে যদি ভালোবাসা যায় তবেই তাকে দেশপ্রেম বলা যাবে । নিজের দেশ, জাতি , ভাষা ও মানুষের প্রতি গভীর অনুভূতির নামই দেশপ্রেম বা স্বদেশপ্রেম। প্রকৃত দেশপ্রেমি ক স্বদেশের প্রতি প্রচণ্ড দা য়বদ্ধ থাকে ফলে স্বদেশের মঙ্গল হোক এমন সকল কাজ তিনি করতে পারেন। নিজের দেশকে ভালোবাসা এবং জন্মদাত্রী মা কে ভালোবাসা একই বিষয়।

দেশপ্রেমের স্বরূপ:

মানুষ যদি নিজেকে ভালবাসতে পারে তবেই সে নিজের দেশকে ভালবাসতে পারবে । ভালোবাসার অনুভূতি হৃদয়ে জাগরিত হলে ই স্বদেশপ্রেমের অনুভূতি হৃদয়ে জেগে উঠবে । স্বদেশপ্রেম থেকেই সৃষ্টি হয় বিশ্বপ্রেম আর বিশ্বপ্রেমিক হয়ে ওঠে মানবপ্রেমিক বা মানব কল্যাণকামী । নিজের দেশের সঙ্গে মানুষের আত্মিক বন্ধন সৃষ্টি হয় ফলে ব্যক্তির দেহ মনে স্বদেশের অতি ক্ষুদ্র উপাদানও প্রভাব বিস্তার করে ।

স্বদেশের প্রতি ভালোবাসার মধ্যে থাকে দায়িত্ব ও কর্তব্য বোধের ছোঁয়া । মা , মা টি ও মানুষকে ভালবাসার মধ্যে রয়েছে দেশপ্রেমের বৈশিষ্ট্য। দেশকে ভালোবাসার এ আবে গকে মানুষ বিভিন্নভাবে প্রকাশ করে থাকে । শিল্প ও সাহিত্য রচনা , ছবির ক্যানভাস, বিচিত্র শব্দের ব্যবহার, দুর্যোগে বীরত্ব দেখানো সহ বিভিন্ন ভাবে দেশপ্রেমের এক একটি ধা রা প্রকাশ পায়।

Books দেশপ্রেম বা স্বদেশ প্রেম । প্রবন্ধ রচনা

দেশপ্রেমের প্রেরণা :

“মি ছা মনি মুক্তা হে ম স্বদেশের প্রিয় প্রে ম
তার চেয়ে রত্ন না ই আর।”
-(ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত)

দেশের থেকে প্রিয় আর কোন ভূমি হতে পারে না । স্বদেশের কারণেই আমরা পেয়ে থাকে আমাদের পরিচয় তাই সবসময় স্বদেশের প্রতি আমরা ঋণী থাকি । নিজের ধন, মান, যশ এমনকি জীবন দিয়ে ও দেশের সম্মান রক্ষা করার চেষ্টা করা উচিত। চিন্তা , কথায় ও কাজে দেশের জন্য যে ভালোবাসা প্রকাশ পায় সে টি প্রকৃত ভালোবাসা ।

মানুষের শরীরের সঙ্গে শি রা -উপশি রা র যে সম্পর্ক থাকে একটি দেশের সঙ্গে প্রতিজন মানুষের সেই একই রকম সম্পর্ক তৈ রি হয়। দেশের সং স্কৃতি , ইতিহাস ও ঐতিহ্য বড় আপন মনে হয়। দেশমা তৃকা র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গি য়ে ই দেশপ্রেমের বহিঃ প্রকাশ ঘটে । সভ্য সমা জে র প্রা য় প্রতিজন মানুষ স্বদেশকে ভা লো বা সবে এবং স্বদেশের মঙ্গলা র্থে যে কো নো কাজ করতে প্রস্তুত থা কবে ।

দেশপ্রেমের প্রকাশ:

এমন দেশটি কো থা ও খুঁজে পা বে না কো তুমি
সকল দেশের রা নী সে যে আমার জন্মভূমি
-(দ্বিজেন্দ্রলাল রায়)

নিজ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, ভাষা , সাহিত্যের সঙ্গে প্রতিজন মানুষের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে । দেশকে ভালোবাসতে গেলে দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রথমে স্বীকার করতে হবে । বিদ্যা শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি একজন ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে । নিজের অবস্থান থেকে দেশের সম্মান বৃদ্ধি হয় এমন কাজ করতে হবে । দেশকে ভালোবাসার জন্য অনেক অর্থবিত্তের প্রয়োজন আছে এমন ভা বা যাবে না । দেশকে ভালোবাসতে গেলে মহৎ হৃদয় থা কতে হবে । ব্যক্তি ভে দে দেশপ্রেমের প্রকাশ বিচিত্র রকম হতে পারে ।

দেশের বৃহৎ স্বার্থের জন্য যেমন আত্মত্যাগ করতে হতে পারে তেমনি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাজ সামষ্টিক ভাবে দেশের স্বার্থকে বৃহৎ করতে পারে । মানুষ তার অবস্থান অনুসা রে , নিজের ক্ষমতা অনুসা রে স্বদেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটা তে পারে । স্বদেশভূমি যখন বি পদে র সম্মুখী ন হয় দেশপ্রেম প্রকাশ এর সবচেয়ে উপযুক্ত সময় তখনই। দেশকে যে কোন বি পদে র হা ত থেকে রক্ষা করার জন্য একজন দেশপ্রেমি ক সদা প্রস্তুত থাকে ।দেশকে ভালোবাসা দেশের প্রতি ঋণ শো ধে র উপায় মা ত্র।

দেশপ্রেমের বৈশিষ্ট্য :

প্রতিজন মানুষ নিজ দেশের সুনা মে যেমন সুখ অনুভব করে তেমনি দেশের খা রা প সং বা দ তাকে আরো বে শি দুঃ খ অনুভব জা গি য়ে দে য়। দেশপ্রেমি ক ব্যক্তি স্বদেশকে নিজের জীবনের চেয়ে অধিক মূল্য বা ন মনে করে । শর্তহী নভাবে প্রকৃত দেশপ্রেমি ক দেশের পা শে থাকে । বন্য পশুকে যদি লো কা লয়ে নি য়ে আসা হয় সে কখনো ই উন্মুক্ত ভাবে বা স্ব-ইচ্ছা য় লো কা লয়ে থা কবে না , আবা র মানুষকে যদি বন্য জীবনে ফি রে যে তে বলি তা হলে সে কোনভাবে ই বনে যে তে রা জি হবে না ।

প্রতিজন প্রাণী নিজের আবা সস্থল এর প্রতি জন্মগত ভাবে ই ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়। দেশ প্রেমিক মানুষ স্ব-ভূমি , স্ব- জাতি র প্রতি সবসময় কৃতজ্ঞ থাকে । দেশ প্রেমিক দেশের মানুষকে ভালোবাসেএকইসঙ্গে দেশের গৌ রব আকা ঙ্ক্ষা য় উচ্চা ভি লা ষী থাকে ।

দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত:

একজন জননী কে সন্তান যেমন ভালোবাসেঠিক তেমনি ভাবে স্বদেশে জন্ম নে ওয়া প্রতিজন মানুষ নিজের দেশকে ভালোবাসে। কবি র ভাষা য় বলতে গেলে – সকল দেশের রা নী সে যে আমার জন্মভূমি এই অভি ব্যক্তি আমাদের মনে জেগে ওঠে । দেশ আয়তনে যা ত ক্ষুদ্র বা অর্থনৈ তি কভাবে দুর্বল হোক না কে ন সে টি ওই দেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থা ন।

স্বদেশকে রক্ষা র জন্য ব্রিটিশ বিরোধী আন্দো লন থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশ পর্যন্ত দেশপ্রেমের বহু দৃষ্টান্তরয়েছে । ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকী , বাঘা যতীন, প্রীতিলতা , সূর্যসেন তিতুমীর ভারতীয় উপমহা দেশে দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টা ন্ত। এই মানুষগুলো র সা হস ও আত্মত্যা গে র তুলনা কোন কি ছুর সঙ্গে চলে না।

বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে ভাষার মান রাখতে সালাম, বরকত রফিক জব্বার সহ নাম নাজানা অনেক মানুষ ১৯৫২ সালে রাজপথে দিয়েছে রক্ত। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যু ত্থা ন পাকিস্তানের শাসক শ্রেণিকে পর্যদুস্ত করে দিয়েছিল নির্ভীক দেশ প্রেমিক বাঙালী । ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লক্ষ দেশপ্রেমিক প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে , স্বদেশের জন্য সম্ভ্রম হারিয়েছে ২ লক্ষ মা -বো ন।

দেশের সকল স্বার্থকে ঊর্ধ্বে রেখেই দেশপ্রেমিক জীবনকে চালিত করে । দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি র জন্য দেশপ্রেমি ক সর্বদা চিন্তা র পাশাপাশি কর্মও করে । মহাত্মা গান্ধী , বঙ্গবন্ধু শে খ মুজি বুর রহমান, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী , নেতাজি সুভা ষচন্দ্র বসু প্রমুখ আত্মত্যাগী মানুষ আজও আমাদের দেশকে ভালবাসতে অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছে ।

প্রাচ্যের পাশাপাশি পাশ্চাত্যের দেশসমূহ লেলিন , স্টেলিন, মাওসেতুং , নেলসন ম্যান্ডেলা , মার্টিন লুথার কিং স্বদেশকে ভালবেসে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সারা পৃথিবী তে যখন মহামারী করো না ভাইরাস এর প্রভাব বিস্তার লাভ করেছে তার হাত থেকে বাংলাদেশও রেহাই পায়নি । করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ। কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকার বিত্তবানদের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

সেই আহবানে সাড়া দিয়ে গত ২১ এপ্রিল মানুষের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে শেরপুরে রঝিনা ইগা তী এলাকার ৮০ বছর বয়সী ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন নিজের ভাঙা ঘর মেরামতের জন্য ভিক্ষা করে দুই বছর ধরে জমা নো নগদ দশ হাজার টাকা অনুদান দেয়।

মানুষকে ভালোবেসে নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করে দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নাজিম উদ্দিন। করোনা কালে স্কুলের শিক্ষার্থীরা টিফিন থেকে জমানো টাকা স্থানীয় ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। বিদ্যা নন্দন ফাউন্ডেশন বিনা মূল্যে খাবার সরবরাহ করে দরিদ্র মানুষকে , পলান সরকার পায়ে হেঁটে মানুষের বাড়িতে বাড়ি কে বিনা মূল্যে বই পৌছে দিয়েছেন জ্ঞান বিকাশের জন্য।

নিঃ স্বা র্থভাবে এই মানুষগুলো দেশকে ভালোবেসেছে এবং দেশের ক্রান্তিকালে মানুষের পা শে দাঁড়িয়েছে । তাঁদের আদর্শ আমাদের অনুসরণ করা উচিত। দেশপ্রেমের মা ধ্য ম: দেশপ্রেম প্রকাশে র মাধ্যমদেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসা। একজন ব্যক্তির সকল প্রাপ্তির পেছনে দেশের অবদান থাকে তাই সে দেশের জন্য সকল কিছু বিসর্জন দিতে পারে।

দেশে যখন কোন সমস্যা থাকে না তখন দেশপ্রেমের বহিঃ প্রকাশ ঘটানো একটু অসম্ভব কি ন্তু দেশে যখন সমস্যা দেখা দেয়< তখনই দেশপ্রেম প্রকাশের উত্তম সময় উপস্থিত হয়। শাসক শ্রেণীর নির্যাতন, দমন-পীড়ন সহ্য করে উপেক্ষিত জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। দেশকে শত্রুমুক্ত করার মাধ্যমে দেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটানো যায়। ধর্ম, বর্ণ ,জাতি নির্বিশেষে মানুষ যখন মূল লক্ষ্য হয়ে ওঠে তখনই দেশপ্রেমের পরিচয় পা ওয়া যায়। দেশের ক্রান্তিকালে দেশের পাশে থাকার মাধ্যমেই স্বদেশপ্রেমের বহিঃ প্রকাশ ঘটে ।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা [ Flag of Bangladesh and tree ]
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা [ Flag of Bangladesh and tree ]

দেশপ্রেমের অনুভূতি :

যুগে যুগে দেশে দেশে সংগ্রামী মানুষ দেশকে ভালোবেসে জীবন উৎসর্গ করেছেন। জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে স্বদেশের জয়গান করেছে ন, জয়গান করেছেন মানব কল্যাণে । দেশের জন্য কাজ করতে পারা সৌভাগ্যের বিষয়। একজন দেশপ্রেমিকের সবচেয়ে সুখের অনুভূতি তখনই সৃষ্টি হবে যখন তিনি স্বদেশের জন্য কোন অবদান রাখতে পারেন।

দেশপ্রেমের অনুভূতি সংজ্ঞায়ি ত করা একেবারেই অসম্ভব এটি মানুষের চেতনা গত বিষয়। স্বদেশের গৌরব, সুনাম দেশপ্রেমিকের আনন্দ অনুভূতির কারণ হবে যদি এর বিপরীত হয় তা হবে দেশপ্রেমিকের জন্য বেদনার। দেশপ্রেমের অনুভূতি কবি জী বনা নন্দ দা শ প্রকাশ করে ছে ন এভাবে –

বাং লা র মুখ আমি দে খি য়া ছি
তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজি তে যা ই না আর।

 

Essay writing, English essay, Essay writing format, Essay writing examples, Short essay writing, How to write an essay in English, Essay topics

দেশপ্রেমের প্রয়োজনীয়তা:

দেশের প্রতি মমত্ববো ধ বা ভালোবাসা ব্য তী ত ব্যক্তি জীবনকে কখনই সার্থক ও সুন্দর করা সম্ভব নয়। দেশের সা ফল্য ও সুনাম প্রতি ষ্ঠা র লক্ষ্যে প্রতিজন মানুষের দেশপ্রেমি ক হওয়া একা ন্ত প্রয়োজন। দেশের কা ঙ্খি ত লক্ষ্য অর্জনে দেশপ্রেমি ককে কাজ করতে হবে । দেশের সমৃদ্ধি অর্জনে একতা বদ্ধ হয়ে কাজ করা অত্য ন্ত প্রয়োজন। প্রতি যো গি তা পূর্ণ পৃথি বী তে স্বদেশের সুনাম অক্ষুন্ন রা খতে এবং অধি কা র প্রতি ষ্ঠা পে তে প্রতিজন না গরি কে র দেশপ্রেমি ক হওয়া অত্য ন্ত প্রয়োজন।

দেশকে যদি আমরা ভালো নাবাসি দেশের প্রয়োজনে তার পাশে না থাকি তবে নিজের জন্মভূমি তার সন্মান হারাবে যা প্রতিজন নাগরিকে র জন্য অত্যন্ত লজ্জার বিষয় হবে । মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ ঘটিয়ে দেশের প্রতিজন নাগরিকের দেশপ্রেমিক হওয়ার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে । দেশপ্রেম ছাড়া কোনভাবেই একটি দেশ জ্ঞান, ধন ও মানে উন্নতি করতে পারে না ফলে দেশপ্রেমের বিকল্প কিছু নেই।

Essay writing, English essay, Essay writing format, Essay writing examples, Short essay writing, How to write an essay in English, Essay topics

দেশপ্রেম ও রাজনীতি:

প্রকৃত রাজনীতিবিদ হতে গেলে দেশপ্রেম ছাড়া কোনভাবেই সম্ভব না । রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য থাকবে মানব কল্যাণ যা প্রকারান্তরে দেশের কল্যাণকে প্রতিনিধিত্ব করবে । কি ন্তু দুর্ভাগ্যে র বিষয় হলে ও বর্তমানে আমাদের কি ছু রাজনীতিবিদ যারা দেশপ্রেমের দীক্ষা নানিয়ে আত্ম ভোগের দীক্ষা নিয়েছে ।

দেশের স্বার্থকে পেছনে ফেলে নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখছে । যে রাজনীতি মানুষের কল্যাণ্যের জন্য সেই রাজনীতি মূলত দেশের কল্যাণ্যের জন্যই। মানুষের ভাগ্যে র পরিবর্তন ঘটলে দেশের পরি বর্তন ঘটবে তাই প্রকৃত রাজনীতিবি দ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে অন্যতম মূলমন্ত্র দেশপ্রেমি ক হওয়া ।

দেশপ্রেমের শিক্ষা :

দেশপ্রেমের প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের সময় ছা ত্র জীবন। ছা ত্র জীবনে মানুষের পি ছুটা ন কম অনুভূত হয়। দেশের জন্য যে কো নো সি দ্ধা ন্ত নি তে এ বয়সী রা একে বা রে পি ছপা হয় না । ছা ত্রজীবনে চিন্তা র ধা রা থাকে অত্য ন্ত ক্ষুরধা র ফলে দেশকে ভালোবাসার দী ক্ষা এ সময়ে নে ওয়া সবচেয়ে বে শি যুক্তি যুক্ত হবে । দেশপ্রেমের মানসি কতা মানুষকে অর্জন করে নি তে হয়। আজকে যে ছা ত্র সেই আগা মী দি নে র দেশ পরি চা লনা কা রী তাই ছা ত্রজীবনে ই দেশপ্রেমের মূলমন্ত্র গ্রহণ করতে হবে ।

ছাত্রজীবন ব্যতীত দেশকে ভালোবাসার চিন্তা সম্ভব নয় এমন বলা যাবে না ।পৃথিবীর ইতি হা সে অনেক উদা হরণ রয়েছে যা রা প্রা তি ষ্ঠা নি ক শিক্ষা লা ভ ছা ড়া ও নিজের মধ্যে দেশপ্রেমের মন্ত্র দ্বা রা নিজেকে উজ্জী বি ত করে ছে । তাই দেশপ্রেমের শিক্ষা মূলত আত্মবো ধ থেকে সৃষ্টি ।

Essay writing, English essay, Essay writing format, Essay writing examples, Short essay writing, How to write an essay in English, Essay topics

সাহিত্যের আলোকে দেশপ্রেমের পরিচয়:

মনে র ভা ব লি খে প্রকাশ করার শৈ ল্পি ক মা ধ্য মকে ই সাহিত্য হিসেবে বি বে চনা করা হয়। দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে বাং লা সাহিত্য তথা বি শ্ব সা হি ত্যে সৃষ্টি হয়ে ছে বহুবিচিত্র গল্প, কবি তা , উপন্যা স, প্রবন্ধ, না টক। বঙ্কি মচন্দ্র চট্টো পা ধ্যা য়, অক্ষয় কুমা র দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কা জী নজরুল ইসলা ম ,জী বনা নন্দ দা শ, শরৎচন্দ্র চট্টো পা ধ্যা য়, শা মসুর রা হমান, সৈ য়দ শা মসুল হক সহ অনেক সা হি ত্যি ক তা দে র সৃষ্টি কর্মে স্বদেশের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ঘটি য়ে ছে ন।

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে প্রচারিত গান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা যুগিয়েছে । গানের গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই মর্মস্পর্শী ভাবে গা নে র প্রতিজন ধা রা সৃষ্টি করে ছে ন। সা হি ত্যি কে র কাজ সাহিত্যের আলো কে মানুষের মা ঝে দেশপ্রেমের জা গরণ সৃষ্টি করা ।

দেশপ্রেমের প্রভাব:

দেশপ্রেমের প্রভাবে ব্যক্তির মহৎগুণা বলী প্রকাশ পায়। দেশপ্রেমের প্রভাব ব্যক্তি , পরি বা র, সমা জ তথা নিজের দেশের সবকি ছুকে ই প্রভা বি ত করে । দেশকে শত্রুমুক্ত করতে দেশপ্রেমের প্রভাব যেমন প্রয়োজন হয় তেমনি দেশের অর্থনৈ তি ক পুনঃ র্গঠনে ও দেশপ্রেমের প্রভাব বি দ্য মান। আবা র প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠা র ক্ষে ত্রে দেশপ্রেমের প্রভাব রয়েছে ।

একজন দেশপ্রেমিকের প্রভাবে একজন খা রা প মানুষ নিজের ভুল স্বীকার করে সত্য পথে ধা বি ত হতে পারে । ব্যক্তি গত সং কী র্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠা র ক্ষে ত্রে দেশপ্রেমের প্রভাব রয়েছে ।স্বদেশকে ভালোবেসেই মানুষ বি শ্বসং সা র ভালবাসতে শে খে । দেশপ্রেমের প্রভাবে মহৎ গুণ সম্পন্ন মানুষ হওয়া যায়।

Essay writing, English essay, Essay writing format, Essay writing examples, Short essay writing, How to write an essay in English, Essay topics

বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতি ও স্বদেশপ্রেম:

আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের অর্থনৈতিক ও সমাজ জীবনে বৃহৎ পরিবর্তন এসেছে । যৌথ পরিবা র ভেঙ্গে একক পরিবারে পরিণত হচ্ছে , গ্রাম ছেড়ে শহরে বসবাস করার প্রবণতা বাড়ছে । মানুষে মানুষে প্রাণে র মিল বর্তমান সমাজে কমতে শুরু করেছে । প্রতিজন মানুষ শুধু নিজের কথাই চিন্তা করছে ফলে সমাজে একটি বিচ্ছি ন্নতা সৃষ্টি হচ্ছে ।

সামাজিক এমন পরিস্থিতিতে দেশপ্রেমের চেতনা সৃষ্টি করা একা ন্ত প্রয়োজন। সমা জে বসবা সরত মানুষের কল্যাণ হয় এমন কাজ আমাদের করা উচিত। শুধু নিজের জন্য নয় দেশ ও দশে র জন্য ভা বতে হবে । মানুষের জন্য কাজ করা মা নে ই দেশের জন্য কাজ করা । তাই সং কী র্ণ মানসি কতা পরি হা র করে দেশ ও জাতির কল্যাণের মানসিকতা তৈরি করতে হবে ।

দেশপ্রেমের উগ্রতা :

দেশপ্রেম মানুষের একটি উন্নত চরি ত্রে র পরিচয় বহন করে । প্রকৃত দেশপ্রেমি ক শুধু নিজের দেশের চিন্তা র পাশাপাশি সমগ্র বি শ্বে র মানুষের কথা চিন্তা করে কি ন্তু উগ্র দেশপ্রেম শুধু স্বদেশের জা তী য়তাকে বা শ্রেষ্ঠত্বকে প্রতি ষ্ঠা করতে চা য় । এমন উগ্রতা পৃথিবীর জন্য ভয়া বহ হয়ে ওঠে । পা শ্চা ত্যে র কি ছু দেশ তা দে র শ্রেষ্ঠত্ব প্রমা ণ করার জন্য নি ষ্ঠুর আচরণ করে ।

নিজেদে র শক্তি সা মর্থ্য ও শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে অন্য দেশের উপর অন্যা য় আক্রমণ করে এমনকি মানুষ হত্যা করতে ও তারা একবিন্দু ভাবে না । উগ্র মানসিকতা বজায় থাকলে সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়ে । উগ্র জাতীয়তাবাদ বা উগ্র দেশপ্রেম অশান্তি ও অকল্যাণ বয়ে আনে তাই এমন মানসি কতা পরি হা র করা উচিত।

Essay writing, English essay, Essay writing format, Essay writing examples, Short essay writing, How to write an essay in English, Essay topics

দেশপ্রেম ও আমাদের কর্তব্য :

পৃথি বী তে মানুষের বসবা স উপযো গী করে তো লা র জন্য বহু হৃদয়ে র মানুষ আত্মত্যা গ করে ছে ন। পৃথিবীর প্রা য় প্রতিজন দেশে ই দেশপ্রেমি ক মা নুষে রা তা দে র আদর্শ স্থা পন করে রে খে ছে ন। এই মহৎ হৃদয়ে র মানুষগুলো পৃথি বী তে করতে চেয়ে ছে ন শা ন্তি র নী ড়। আমাদের কর্তব্য হলো মহৎ হৃদয়ে র মানুষগুলো র আদর্শ ধা রণ করে তা দে র ভা বনা গুলো কে সমা জে প্রতি ষ্ঠা করা যা দেশ ও সমগ্র বি শ্বে র কল্যাণ বয়ে আনবে ।

দেশপ্রেমিক মানুষকে সম্মান জা না তে হলে তার আদর্শকে সম্মান দিতে হবে পাশাপাশি তার আদর্শ প্রচা র ও প্রসা রে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে । আজকের পৃথিবী থেকে হিং সা , হা না হা নি , অশা ন্তি দূর করতে হলে আদর্শ দেশপ্রেমি কে র চিন্তা চে তনা সমা জে প্রতি ষ্ঠা করতে হবে ।

উপসংহার:

“দেশপ্রেম ঈমা নে র অঙ্গ”- এই বা ণী কে ধা রণ করে স্বদেশের কল্যা ণে প্রতিজন মানুষকে নি য়ো জি ত থা কতে হবে । দেশপ্রেমি ক মানুষের মূল লক্ষ্য হবে মানুষকে ভালোবাসা । নিজ দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই স্বদেশের জন্য কাজ করতে হবে । দেশপ্রেমকে রূপা ন্তরি ত করতে হবে মানবপ্রে মে । প্রতিজন দেশপ্রেমি ক মানুষ সমগ্র পৃথিবীর মানুষের কাছে অত্য ন্ত সম্মা নী য়। নিজের স্বা র্থ পরি হা র করে দেশের স্বা র্থ রক্ষা করতে হবে । দেশপ্রেমের মত মহৎ গুণ ধা রণ করে দেশ ও জাতি র জন্য কি ছু অবদা ন রা খতে পা রা একজন দেশপ্রেমি কে র মূল কর্তব্য ।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment